সংবাদদাতা: পাবনার ঈশ্বরদীতে জনতা ব্যাংকের পাকশী শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) খালেদ সাইফুল্লাহ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ব্যাংকের নগদ অর্থ নিয়ে শাখা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে রাতে ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন জনতা ব্যাংক ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোহছানাতুল হক।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাকশী শাখার ব্যবস্থাপক খালেদ সাইফুল্লাহ ক্যাশ রেমিটেন্সের জন্য ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখায় আসেন। আগের দিন তিনি টেলিফোনে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজনের কথা জানালেও, নগদ সংকটের কারণে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হননি। পরদিন সকালে আবার ফোন করে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।
সহকারী মহাব্যবস্থাপক আরও জানান, সেদিন বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে খালেদ সাইফুল্লাহ জনতা ব্যাংকের দাশুড়িয়া বাজার শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ঈশ্বরদী কর্পোরেট শাখা থেকে আরও ১ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। টাকা হস্তান্তরের সময় আনসার সদস্য মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর শেষে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খালেদ সাইফুল্লাহ আনসার সদস্য মাহবুব ও চালক মো. ইসমাইল হোসেনকে নিয়ে প্রাইভেট কারে পাকশী শাখার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে পাকশী শাখার সহকারী ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, খালেদ সাইফুল্লাহ তখনও শাখায় পৌঁছাননি। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করেন এবং পুলিশি পরামর্শে থানায় জিডি করা হয়।
জনতা ব্যাংকের দাশুড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমান বলেন, “বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে পাকশী শাখার ম্যানেজার আমাদের শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। নিয়ম মেনে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।”
নিখোঁজ ম্যানেজারের স্ত্রী দিলরুবা বেগম বলেন, “প্রতিদিনের মতো তিনি সকালে ব্যাংকে যান। বিকেলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসে জানান, তিনি নিখোঁজ। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ। স্বেচ্ছায় কোথাও গেছেন, নাকি কেউ তাকে গুম করেছে—তা আমরা জানি না।”
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর বলেন, “ব্যাংকের অর্থ লেনদেনের বিষয়টি আমরা জানি। একটি জিডি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”