এবিএম ফজলুর রহমান, মস্কো থেকে : চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে চালু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। মস্কোতে বিশ্ব অ্যাটমিক সপ্তাহে, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক সামা বিলবাও ওয়াই লিওন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটই চালু হলে বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ হবে বলেও জানান তিনি। যা সম্পূর্ণ কার্বনমুক্ত। এ সময়, সামা বিলবাও আরএ বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। যেসব দেশ বিদ্যুৎ ঘাটতি বা এ সংক্রান্ত সমস্যায় রয়েছে, তাদেরকে বাংলাদেশের পদক্ষেপ অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এদিকে, বৃহৎ জনসংখ্যা দেশ বাংলাদেশের জীবনমান, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক।
এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চলমান কার্যক্রমের বিষয়ে আমরা মুগ্ধ। সেখানে দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। তাছাড়া, সেখানকার কর্মকর্তারাও বেশ দক্ষ। ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ শূন্য থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে, যা সম্পূর্ণ কার্বনমুক্ত। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ। গত বৃহস্পতিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড অ্যাটমিক সপ্তাহ শুরু হয়।আগামী পৃথিবী হবে দূষণমুক্ত, সবুজ ও নিরাপদ পরমাণুর বিশ্ব। সর্বত্র নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বকে এগিয়ে নিতে হবে। আগামী পৃথিবী হবে দূষণমুক্ত এবং সবুজ পরিবেশ বান্ধব। রাশিয়ার মস্কো শহরের‘ওয়ার্ল্ড অ্যাটমিক উইক’ বক্তারা বলেন বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভবিষ্যতের শক্তির নানা সমাধান নিয়ে আলোচনা করছেন গবেষকরা। নিউক্লিয়ার পাওয়ার, নবায়নযোগ্য শক্তি, এমনকি ফিউশন টেকনোলজির মতো নতুন দিগন্ত নিয়েও চলছে সেশন ও আলোচনা।আয়োজকরা বলেন, ফিউশন এনার্জি যদি আয়ত্তে আনা যায়, তাহলে সেটাই হতে পারে মানবজাতির নিরাপদ ও সীমাহীন শক্তির উৎস। বর্তমান গবেষণা অগ্রগতি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আর দক্ষ জনবল তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে আসে সেশনে। এছাড়া কীভাবে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বা বড় প্রযুক্তি প্রকল্প শুধু বিদ্যুৎ সরবরাহই নয়, বরং পুরো অঞ্চলের নগরায়ণ, অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে দিতে পারে সেই বিষয়ও উঠে আসে আলোচনায়। ভবিষ্যতের টেকসই বিদ্যুৎ বা শক্তি ব্যবস্থায় নিউক্লিয়ার পাওয়ার, নবায়নযোগ্য শক্তি, আর নতুন প্রযুক্তি একসাথে হাত ধরেই এগোবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ আর বৈশ্বিক জ্বালানি নিরাপত্তা—দুই লক্ষ্যই পূরণে এই সমন্বিত পথ হতে পারে একমাত্র সমাধান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন রসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। প্রধান অতিথি ছিলেন রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি, আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা (আইইএইউ) মহাপরিচালক সাবা বিল বি ইলিয়ন। বিশ্বের ১৮০ টি দেশ থেকে প্রায় ১৬০০ প্রতিনিধি এই উৎসবের যোগ দেয়। আগামী সেপ্টেম্বর এই উৎসব শেষ হবে।