ভাঙ্গুড়ার কৈডাঙ্গার গুমানী নদীতে সেতুর দাবী ভুক্তভোগী মানুষের 

ভাঙ্গুড়ার কৈডাঙ্গার গুমানী নদীতে সেতুর দাবী ভুক্তভোগী মানুষের 

সংবাদদাতা:

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার কৈডাঙ্গা গ্রামের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন গুমানী নদীর ওপর একটি স্থায়ী সেতু। বহু বছর ধরে নদীর দুই পাড়ের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকা ও রেলব্রিজ দিয়ে পারাপার করছেন। বিশেষ করে কৈডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, কৃষক এবং জরুরি সেবাপ্রার্থী সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, গুমানী নদীর দুই পাড়ের কৈডাঙ্গা, নতুনপাড়া, পাঁচ বেতুয়ান, বড় বেতুয়ান, বিলেরিবাড়ী, চর-ভাঙ্গুড়া, এরশাদনগর, সুজা, চাচকিয়া, কালিয়াকোর, পুই বিল, লক্ষীকোল ও দিলপাশার গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এই নদী পার হন। সন্ধ্যার পর খেয়া নৌকার চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুই পাড়ের যোগাযোগ। নদীর পাশেই ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রেলপথের একটি রেল ব্রিজ থাকলেও সেটি শুধুমাত্র ট্রেন চলাচলের জন্য। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে সেই রেল ব্রিজ দিয়েই পার হন। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন স্থানীয়রা। বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়, যা সময় ও অর্থ উভয় দিকেই কষ্টসাধ্য।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, বর্ষার সময় নৌকায় পারাপার খুব বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। অনেক সময় ছোট শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে নদী পার হতে আতঙ্কে থাকি।

কৃষক মো: শহিদুল ইসলাম জানান, নদীর ওপারের কৃষি জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে অনেক সময় নৌকা বন্ধ থাকে। আবার বিকল্প রাস্তা দিয়ে যেতে সময় ও ভাড়ায় বেশি খরচ হয়। এতে আমাদের কৃষিকাজে সমস্যা হচ্ছে।

চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন বলেন, বর্ষার সময় নদী পার হওয়া খুব ভয় লাগে। অনেক দিন স্কুলে যেতে পারি না।

কৈডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকরোজা খাতুন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই নদী পাড়ি দিয়ে আসে। নৌকার অভাবে অনেকেই অনুপস্থিত থাকে, যা তাদের পড়াশোনায় প্রভাব ফেলছে। দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে গুমানী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবা সব ক্ষেত্রে ভাঙ্গুড়ার হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটবে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: নাজমুন নাহার বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো: রবিউল ইসলাম বলেন, সরজমিনে দেখে ব্রিজ করার মত উপযুক্ত জায়গা হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *