পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের নলদহ নতুনপাড়া গ্রামের কৃষক নাছির শেখ ও তার স্ত্রী রবিজা খাতুন দেড় বছর ধরে বাড়িছাড়া। বড় ছেলে শিমুল শেখকে জমি লিখে না দেওয়ায় তারা নিয়মিত নির্যাতনের শিকার হয়ে কখনো মেয়ের বাড়ি, কখনো আবার স্বজনদের ঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে শিমুলকে বিদেশ পাঠানোর জন্য নাছির শেখ প্রায় তিন বিঘা জমি বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু শিমুল দেশে ফিরে জুয়া ও মাদকে জড়িয়ে পড়ে। এক পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করে। সে নিয়মিত টাকা দাবি করত, না দিলে বাবা-মাকে মারধর করত।
সম্প্রতি জমি তার নামে লিখে দেওয়ার চাপ দিলে নাছির শেখ রাজি না হওয়ায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর শিমুল রড, হাতুড়ি ও চাপাতি দিয়ে বাবা-মাকে মারধর ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঘর থেকে বের করে দেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। প্রাণভয়ে তারা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
ছোট ছেলে রিপন প্রতিবাদ করলে পরদিন শিমুল সহযোগী জামাল শেখ, আরিফ শেখ, শিউলি বেগম ও আজিম শেখকে নিয়ে তাকেও বেধড়ক মারধর করে। এতে রিপন গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুশয্যায়।
চোখ ভেজা কণ্ঠে নাছির শেখ বলেন, “জমি না দেওয়ায় আমাকে আর আমার স্ত্রীকে বারবার মারধর করে শিমুল। সেদিন গলা চেপে ধরে আছড়ে আছড়ে যেভাবে মেরেছে, মনে হয়েছিল বাঁচবো না। আমি তার বিচার চাই।”
স্ত্রী রবিজা খাতুন বলেন, “ছেলের নির্যাতনে দেড় বছর ধরে ঘরছাড়া হয়ে আছি। আশপাশের মানুষ লুকিয়ে না রাখলে হয়তো সেদিন মেরেই ফেলত। আমার ছোট ছেলেকে যে ভাবে মেরেছে, মাথার খুলি ভেতরে ঢুকে গেছে। সে বাঁচবে কি না জানি না। আমি ওই ছেলের বিচার চাই।”
ঘটনার পর থেকে শিমুল পলাতক। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে শিমুলসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।