বিবৃতি প্রতিবেদক
পাবনায় সেচ সাশ্রয়ী আউশ ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। চলতি মৌসুমে বর্ষা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা আশাবাদী, এ বছর কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া সম্ভব হবে। আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে অতিরিক্ত সেচ খরচ কমেছে এবং রোগ-পোকার আক্রমণও তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাবনার ৯টি উপজেলায় মোট ২২ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে রোপা আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি বোনা আউশ ধানের আবাদও বেড়েছে।
মালঞ্চি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, তিনি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তায় ফসল ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, “কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিঘাপ্রতি ২০ মণের বেশি ধান পাবো বলে আশা করছি।”
চাটমোহরের ভাদড়া গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব মহররম হোসেন বলেন, আউশ ধান উৎপাদনে খরচ কম হওয়ায় এর লাভও তুলনামূলক বেশি। তিনি কৃষি অফিসের সহযোগিতায় উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৮৫ জাতের আবাদ করেছেন এবং জানান, রাজস্ব প্রকল্পের আওতাধীন তাঁর প্রদর্শনী মাঠ অন্য কৃষকদের তুলনায় ভালো ফলন দিয়েছে।
সাঁথিয়ার গোহাইলবাড়ি গ্রামের কৃষক আবদুর রহিম জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছেন। তাঁর মতে, ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি বাজারে সঠিক দাম পেলে কৃষকেরা আরও বেশি লাভবান হবেন।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের নিয়মিত সচেতনতা বৃদ্ধি ও সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এবার রোগবালাইয়ের তেমন আক্রমণ হয়নি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষ করার ফলে কৃষকেরা কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ জানান, এ উপজেলায় উফশী জাতের আউশ ধানের আবাদ বেড়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১,১০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করায় কৃষকেরা আগ্রহী হয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “ধান কর্তনের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা ভালো লাভবান হবেন।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রামাণিক বলেন, “আউশ ধানের গড় ফলন হিসেবে প্রতি হেক্টরে প্রায় ৩.৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হবে। পর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে এ বছর অতিরিক্ত সেচ খরচ হয়নি। পাশাপাশি উন্নতমানের বীজ সরবরাহ, কীটনাশক ব্যবহারে সচেতনতা এবং নিয়মিত কৃষি পরামর্শের কারণে কৃষকেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন।”